রাতদিন ওয়েবডেস্ক - ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় ৩০ বছর বয়সি ভারতীয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার মহম্মদ নিজামুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করেছে স্থানীয় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ৩ সেপ্টেম্বর সকালে, যখন পুলিশ দাবি করছে তারা একটি ৯১১ কলের ভিত্তিতে ছুরি হামলার অভিযোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সান্তা ক্লারা পুলিশ বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অফিসাররা পৌঁছে দেখেন নিজামুদ্দিন ছুরি হাতে তার রুমমেটকে মাটিতে চেপে ধরেছেন। পুলিশ জানায়, মৌখিক নির্দেশ অমান্য করে তিনি আবার আঘাতের ভঙ্গি করলে এক অফিসার চার রাউন্ড গুলি চালান। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আহত রুমমেট এখনও চিকিৎসাধীন।
পুলিশ প্রধান কোরি মরগান জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল থেকে দুটি ছুরি উদ্ধার হয়েছে এবং অফিসারের পদক্ষেপ “অন্তত একটি প্রাণ বাঁচিয়েছে” বলে তাদের বিশ্বাস। সান্তা ক্লারা কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস ও পুলিশ যৌথ তদন্ত শুরু করেছে। তবে নিহতের পরিবার পুলিশের বয়ান মানতে নারাজ। তাদের দাবি, নিজামুদ্দিনই প্রথমে পুলিশকে ফোন করেছিলেন সাহায্যের জন্য।
তেলেঙ্গানার মেহবুবনগরের বাসিন্দা নিজামুদ্দিন ২০১৬ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। ফ্লোরিডায় কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স শেষ করে একটি প্রযুক্তি সংস্থায় কাজ শুরু করেন। পরে ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থানান্তরিত হন। পরিবারের অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বর্ণবিদ্বেষ, কর্মস্থলে হয়রানি, বেতন জালিয়াতি ও অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বরখাস্তের শিকার ছিলেন। মৃত্যুর আগে নিজের লিঙ্কডইন প্রোফাইলে তিনি লিখেছিলেন, “আমি বর্ণবিদ্বেষ, জাতিগত হয়রানি, নির্যাতন, বেতন জালিয়াতি, অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত হওয়ার শিকার। যথেষ্ট হয়েছে, শ্বেতাঙ্গ বর্ণবাদী আমেরিকান মানসিকতার অবসান ঘটাতে হবে।”
পরিবারের দাবি, এই অভিযোগগুলোও তদন্তের আওতায় আনা উচিত। তারা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছে। মজলিস বচাও তেহরিক নেতা আমজেদ উল্লাহ খান ইতিমধ্যেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং সান ফ্রান্সিসকো কনস্যুলেটকে প্রক্রিয়ায় যুক্ত করার অনুরোধ করেছেন।ঘটনার খবর পরিবারে পৌঁছাতে প্রায় দুই সপ্তাহ লেগেছে বলে অভিযোগ। নিজামুদ্দিনের বাবা জানিয়েছেন, সান্তা ক্লারার একটি হাসপাতালে তার মরদেহ রাখা আছে এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেই তা দেশে আনার ব্যবস্থা করা হবে।