রাতদিন ওয়েবডেস্ক : রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক শিক্ষণ-সংস্থাগুলির প্রায় বিয়াল্লিশ হাজার ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের স্বার্থে আগামী ২৬ই ফেব্রুয়ারী কলকাতায় বসছেন রাজ্যের শতাধিক কলেজ কতৃপক্ষ। যে সব ডিএলএড পড়ুয়া ২০২১-২৩ শিক্ষাবর্ষে অফলাইনে ভর্তি হয়েছেন, এক জনস্বার্থ মামলা দায়েরের ফলে তাদের রেজিস্ট্রেশন দিতে নারাজ প্রাথমিক শিক্ষা- পর্ষদ। যার ফলে আগামী মার্চ থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষায় ৪২ হাজার পড়ুয়া অংশ নিতে পারবেন না। তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তথ্য অনুসারে মাত্র ১১ হাজার পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে পারবেন। এই সমস্যার কারণে ইতিমধ্যেই পড়ুয়ারা যেমন সুরাহা খুঁজতে পথে নেমেছেন, সেভাবেই কলেজ কতৃপক্ষও জোট বেঁধেছেন।
এই পরিস্থিতিতে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সল্টলেকে ইজেডসিসি (EZCC) প্রেক্ষাগৃহে একটি জরুরী বৈঠক ডাকেন রাজ্যের বেসরকারি ডিএলএড কলেজ কর্তৃপক্ষগুলি। সেখানে ২০০-টিরও বেশী কলেজ কতৃপক্ষ অংশ নেন। এই মঞ্চ থেকেই আগামী দিনে অফলাইন পড়ুয়াদের সমস্যা সমাধানে কর্মসূচি নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এই নব-গঠিত মঞ্চ – অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটস – এর পক্ষ থেকে শান্তিনাথ সরকার জানান, “আমরা রাজ্যের সব বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের একজোট করে উদ্ভূত সমস্যা থেকে বের হবার পথ বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূর্ব বর্ধমান ও বীরভূমের একাধিক ডি.এল.এড ও বি.এড কলেজের কর্ণধার মলয় পীট আমাদের নেতৃত্ব দেবেন সর্বসম্মত ভাবে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এদিন মলয় পীট জানান, “কিছু অশুভ শক্তি বা দালালরা শুধুমাত্র পয়সা রোজগারের উদ্দেশ্যে কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে আজ অফলাইনে যারা নাম নথিভুক্ত করেছেন সেই সমস্ত অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ডি.এল.এড পরীক্ষা দিতে পারবেনা। ওই সব অসাধু ব্যক্তি আজ আদালতকে ঢাল হিসেবে অর্থ রোজগার করতে চাইছে। আমরা এই সমস্যার সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের এখন প্রথম ও একমাত্র লক্ষ্য অফলাইনে নথিভুক্ত বি.এড ও ডি.এল.এড অগনিত ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা, যাতে তারা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে।”
“আমরা ছেলে-মেয়েদের এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ইউনাইটেড হতে চাইছি। আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন সংগঠন বা কোন মঞ্চ এই মুহূর্তে ঘোষণা করা হচ্ছে না। পূর্ববর্তী ঘটনার কোনো রকম আলোচনা, কোন দোষারোপ - এগুলো ভুলে গিয়ে, ইউনাইটেড হবার ক্ষেত্রে যেগুলো বাধা সেগুলোকে বর্জন করে, এক ভাবে এগিয়ে চলার লক্ষ্যে কাজ করতে চাইছি,” বলে জানান মলয় বাবু।স্বাভাবিক ভাবে এর আগে রাজ্যের টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কতৃপক্ষগুলির সংগঠনের সঙ্গে এই মঞ্চের যে কোন সম্পর্ক নেই তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
এই নব-গঠিত অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে মলয় পীট জানান, “ইতিমধ্যেই আমরা কলকাতায় আমাদের একটি অফিস নির্দিষ্ট করেছি, যেখান থেকে পর্ষদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করা হবে। আগামী ২৬শে ফেব্রুয়ারী আমরা সল্টলেকে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্র (EZCC) প্রেক্ষাগৃহে রাজ্যের সব জেলার টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কতৃপক্ষের সকলকে নিয়ে সম্মেলন করা হবে। সেই দিনই আমরা এর অফিসেরও উদ্বোধন করবো।” তিনি আরও বলেন, “আমদের বিশ্বাস রাজ্য সরকার, পর্ষদ সহ সকলে এই বিপুল পরিমান ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সদর্থক সিদ্ধান্ত নেবেন।”