রাতদিন ওয়েবডেস্ক - এশিয়া কাপ টুয়েন্টি ম্যাচে ভারত ওমানের বিপক্ষে শেষ দিকে চাপ সামলে ২১ রানে জিতল, অষ্টাদশ ওভারে আমির কালিমকে আউট করতে বাউন্ডারি লাইনে হার্দিক পাণ্ডিয়ার এক হাতে ধরা সেই ক্যাচই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়, ওই সময়ে ওমানের দরকার ছিল চৌদ্দ বলে চল্লিশ রান, হর্ষিত রানার ছোট লেংথের বলে স্কয়ার লেগের দিকে উঠিয়ে দেন কালিম, হার্দিক দৌড়ে গিয়ে ভারসাম্য রেখে এক হাতে ক্যাচটি নেন, এই উইকেটের পরই ওমানের দ্বিতীয় উইকেটের তিরানব্বই রানের জুটি ভাঙে এবং ভারতের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।ভারত আগে ব্যাট করে বিশ ওভারে আট উইকেটে একশো আটাশি তোলে, অভিষেক শর্মা পনের বলেই আটত্রিশ করে ঝড় তোলেন, সঞ্জু স্যামসন নম্বর তিনে নেমে পঁয়তাল্লিশ বলে ছাপ্পান্ন করেন, টিলক বর্মা উনিশ বলে উনত্রিশ এবং অক্ষর প্যাটেল তেরো বলে ছাব্বিশ রান যোগ করেন, ভারতের ইনিংসে শাহ ফয়সাল জিতেন রমনন্দি এবং আমির কালিম দুটি করে উইকেট নেন।
টার্গেট তাড়া করে ওমান ভালো লড়াই করে, জতিন্দর সিং বত্রিশ করে ওপেনিং জুটিতে ছাপ্পান্ন রান তোলেন, এরপর আমির কালিম ছেচল্লিশ বলে চৌষট্টি এবং হাম্মাদ মির্জা তেত্রিশ বলে একান্ন করে ম্যাচে চাপে রাখেন, হার্দিকের হাতে কালিমের উইকেট পড়ার পর ওমানের রানের গতিও থেমে যায়, নির্ধারিত ওভারে ওমান থামে একশো সাতষট্টি চার উইকেটে, ভারত জেতে একুশ রানে এবং গ্রুপ পর্ব অপরাজিত থেকে সুপার ফোরে ওঠে।ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে হার্দিকের ক্যাচের কথা আলাদা করে উঠে এসেছে, সাইডলাইনের ভারসাম্য রেখে দৌড়ে গিয়ে এক হাতে ধরার সেই গ্রাবকে অনেকেই ম্যাচ জেতানো মুহূর্ত বলছেন, ভারতের ফিল্ডিং কোচও চাপের সময়ে হার্দিকের হ্যান্ড আই কোঅর্ডিনেশন এবং বাউন্ডারির কাছে ফুটওয়ার্কের প্রশংসা করেছেন, ওই ব্রেকথ্রুর পর ভারত ঠিক সময়ে ডট বল ধরে রাখতে পেরেছে এবং শেষ দুই ওভারে শুধু বারো রান দিয়েছে।
বোলিংয়ে ভারত নানা কম্বিনেশন ব্যবহার করে আটজন বোলার ঘুরিয়েছে, বুমরা এবং বরুণকে বিশ্রাম দিয়ে হর্ষিত রানা ও অর্শদীপ খেলেন, হর্ষিত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কালিমকে ফেরান এবং অর্শদীপ শেষ ওভারে উইকেট নিয়ে ম্যাচ সিল করেন, এই জয়ের পর ভারত এক দিনের বিশ্রাম নিয়ে রবিবার দুবাইয়ে পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে, গ্রুপ টপ করে ওঠায় দলের আত্মবিশ্বাস উঁচু থাকছে।
ভারতের ইনিংসের শুরুতে অভিষেক শর্মা আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ছন্দ এনে দেন। তার পনের বলের ঝড়ো আটত্রিশ রানের ইনিংস দলকে গতি দেয়। সঞ্জু স্যামসন তিন নম্বরে নেমে ছাপ্পান্ন রানে ইনিংস গড়েন। টিলক বর্মা ও অক্ষর প্যাটেল মিডল অর্ডারে কার্যকরী অবদান রাখেন। ওমানের বোলাররা মাঝেমধ্যে ব্রেকথ্রু দিলেও চাপ ধরে রাখতে পারেননি। শাহ ফয়সাল ও জিতেন রমনন্দি দুটি করে উইকেট নেন। ভারতের স্কোরবোর্ডে শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রান জমা হয়।ওমানের জবাবে ওপেনার জতিন্দর সিং শুরুতেই ছন্দে ছিলেন। তার সঙ্গে ছাপ্পান্ন রানের ওপেনিং জুটি দলকে আত্মবিশ্বাস দেয়। আমির কালিম ও হাম্মাদ মির্জা মিডল অর্ডারে চাপ সৃষ্টি করেন। কালিমের ছেচল্লিশ বলে চৌষট্টি রানের ইনিংস ছিল ম্যাচের সেরা। হার্দিকের ক্যাচে কালিম আউট হলে ওমানের গতি থেমে যায়। এরপর ভারত ডট বল দিয়ে চাপ বাড়াতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ওমান ১৬৭ রানেই থেমে যায়।
হার্দিক পাণ্ডিয়ার ক্যাচ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। স্কয়ার লেগে ভারসাম্য রেখে এক হাতে ক্যাচটি নেন। সেই মুহূর্তে ওমানের রান দরকার ছিল খুব বেশি। হর্ষিত রানার বলটি ছোট লেংথে ছিল, ঝুঁকি নিয়েই মারেন কালিম। হার্দিকের হ্যান্ড-আই কোঅর্ডিনেশন ছিল অসাধারণ। ভারতের ফিল্ডিং কোচ তার ফুটওয়ার্কের প্রশংসা করেন। এই উইকেটেই ম্যাচ ভারতের দিকে ঘুরে যায়।ভারতের বোলিং পরিকল্পনা ছিল বৈচিত্র্যময় ও কার্যকরী। আটজন বোলার ব্যবহার করে চাপের মুহূর্তে উইকেট তোলা হয়। হর্ষিত রানা ও অর্শদীপ সিং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নেন। বুমরা ও বরুণ বিশ্রামে থাকলেও ভারসাম্য বজায় থাকে। শেষ ওভারে অর্শদীপ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সিল করেন। ভারত ডট বল দিয়ে শেষ দুই ওভারে বারো রান দেয়। এই পরিকল্পনায় ভারত জয় নিশ্চিত করে।
এই জয়ের ফলে ভারত সুপার ফোরে অপরাজিত থেকে জায়গা করে নেয়। দলের আত্মবিশ্বাস এখন অনেক উঁচুতে রয়েছে। রবিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এক দিনের বিশ্রাম নিয়ে দল নতুন পরিকল্পনা করছে। কোচিং স্টাফ ম্যাচ বিশ্লেষণ করে নতুন কম্বিনেশন ভাবছে। হার্দিকের ক্যাচকে কেন্দ্র করে ফিল্ডিং অনুশীলন জোরদার হচ্ছে। ভারত এখন ট্রফির দিকে দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে।