রাতদিন ওয়েবডেস্ক - বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা কোটি কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে জেলে থাকলেও নিজের নির্দোষিতা নিয়ে দৃঢ়। বৃহস্পতিবার ইডির বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে এসে তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “কেউ কিছু প্রমাণ করতে পারবে না।” নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার দুই বছর পর ফের ইডির জালে ধরা পড়েন তিনি।প্রথমবার গ্রেপ্তারের সময় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সিবিআই তাঁকে আটক করে। অভিযোগ, প্রমাণ নষ্টের উদ্দেশ্যে তিনি নিজের মোবাইল ফোন বাড়ির পিছনের পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। তবে সেই মোবাইল উদ্ধার হয় এবং তদন্তে যুক্ত হয়।
দীর্ঘদিন জেল হেফাজতে থাকার পর চলতি বছরের শুরুতে তিনি জামিন পান।কিন্তু আগস্ট মাসে ফের তাঁর বাড়িতে হানা দেয় ইডি। টানা প্রায় ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি জেল হেফাজতেই রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিনের আর্জির শুনানি ছিল ইডির আদালতে। কোর্টে আনা হলে ভ্যান থেকে নামার সময়ই তিনি নিজের নির্দোষিতার দাবি জানান।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে বাজার থেকে মোট ৪৬ লক্ষ টাকা তুলেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। এর মধ্যে ২৬ লক্ষ টাকা গিয়েছে তাঁর স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে এবং বাকি ২০ লক্ষ টাকা বাবার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। ধৃত বিধায়কের স্ত্রী পেশায় শিক্ষিকা। তাঁর অ্যাকাউন্টে এত টাকা কীভাবে এল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে ইডি।এই মামলায় জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীরা বলছেন, এই অর্থের উৎস ও ব্যবহার নিয়ে তাঁরা বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছেন।
আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মামলার নথি ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে জীবনকৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক ভিত্তি রয়েছে। তবে তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে আদালত মন্তব্য করেছে। জামিনের রায়ে আদালত জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর হলেও তদন্তে সহযোগিতা করার শর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া যেতে পারে।