রাতদিন ওয়েবডেস্ক : ফের অশান্তি ও বিবাদ। আর এবার তা চূড়ান্ত পর্যায়ে। যা ঘিরে নাকি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’! এবং দর্শকদের কাছে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। টলিউডে এখন আলোচনার কেন্দ্রে জিতু কমল এবং দিতিপ্রিয়া রায়। তবে তাঁদের সম্পর্কের উষ্ণতা নিয়ে নয়, বরং সেটের তিক্ততা এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে। খবর রটেছে, তাঁরা একসঙ্গে কাজ করা একটি জনপ্রিয় সিরিজের সেটে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছে। সমস্যার শুরু একটি বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে। সূত্র মারফত জানা যায়, হাসাহাসির মুহূর্তে জিতু কমল নাকি দিতিপ্রিয়াকে উদ্দেশ্য করে 'তুমি প্রেগন্যান্ট' বলে ইয়ার্কি করেন। এই মন্তব্যে অত্যন্ত আপত্তি তোলেন দিতিপ্রিয়া।
একজন তরুণ অভিনেত্রী হিসাবে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য তাঁর একেবারেই ভালো লাগেনি বলে জানা গেছে। দিতিপ্রিয়ার আপত্তি জানানোর পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। সূত্র অনুযায়ী, জিতু কমল নাকি তখন দিতিপ্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায় আবার মন্তব্য করে বসেন, 'কিডিশ, ইমম্যাচিওর!' (শিশুসুলভ, অপরিণত)। এই পাল্টা মন্তব্য আগুনে ঘি ঢালে। বিনোদন মহল বলছে, জিতু কমলের এই ব্যক্তিগত আক্রমণ একেবারেই উচিত হয়নি। এর ফলে সেটের পরিবেশ বেশ কিছুক্ষণের জন্য থমকে যায়। দিতিপ্রিয়া বিষয়টি নিয়ে দ্রুত প্রযোজনা সংস্থার কাছে অভিযোগ জানান বলেও শোনা যাচ্ছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে, পর্দার বাইরে এই দুই মুখ্য শিল্পীর মধ্যেকার সম্পর্ক এখন খুবই শীতল।
এই দ্বন্দ্বের পিছনে অনেকেই জিতু কমল এবং দিতিপ্রিয়া রায়ের বয়সের বড় ফারাককে একটি কারণ হিসেবে দেখছেন। যদিও পেশাগত জীবনে বয়সের ফারাক কোনো সমস্যা নয়, কিন্তু দুজনের মধ্যে মতাদর্শ এবং ইয়ার্কি করার ধরনের মধ্যে একটি জেনারেশন গ্যাপের ছাপ স্পষ্ট। জিতু কমলের বয়সে বড় হওয়ার কারণে তাঁর দিক থেকে আসা ইয়ার্কি বা মন্তব্যকে দিতিপ্রিয়া হয়তো সহজে মেনে নিতে পারেননি। অন্যদিকে, দিতিপ্রিয়ার দ্রুত প্রতিক্রিয়াই জিতু কমলের কাছে 'ইমম্যাচিওর' মনে হয়েছে। এই সংঘাত এখন কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি তাঁদের কাজের পরিবেশকেও প্রভাবিত করছে। এই দ্বন্দ্বের জের এতটাই বেড়েছে যে, সিরিজটির ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেছে। জোর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে, জিতু কমল নাকি তাঁর জনপ্রিয় চরিত্র আর্য সিংহরায় থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ভাবছেন।
সূত্র বলছে, সেটের এই নেতিবাচক পরিবেশ এবং প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে বনিবনার অভাবের কারণে তিনি নাকি এই সিরিজটি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যদি 'আর্য সিংহরায়' চরিত্রটি মাঝপথে বদলে যায়, তবে তা দর্শকদের কাছে বড় ধাক্কা হবে এবং সিরিজের টিআরপি-তেও প্রভাব ফেলতে পারে। পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রযোজনা সংস্থা এবং চ্যানেলের পক্ষ থেকে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। দুই মুখ্য অভিনেতার মধ্যে এই ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ায় প্রযোজনা সংস্থা চরম চাপে পড়েছে। এক তো সিরিজের শুটিং শিডিউল পিছিয়ে যাচ্ছে, তার ওপর এই বিতর্ক প্রকাশ্যে আসায় দর্শকদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সূত্র অনুযায়ী, প্রযোজনা সংস্থা বিষয়টি মেটানোর জন্য উভয় শিল্পীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। তাঁদের বোঝানো হচ্ছে যে, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব যেন পেশাদার কাজে প্রভাব না ফেলে। এই দ্বন্দ্বের দ্রুত সমাধান না হলে, সিরিজটির জনপ্রিয়তা ধরে রাখা কঠিন হতে পারে। তবে এই সমস্যার শেষ কোথায়, সেই দিকেই এখন তাকিয়ে আছে গোটা টলিপাড়া।

