Type Here to Get Search Results !

Bangladesh : হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়, মানবাধিকার নিয়ে বড় প্রশ্ন

রাতদিন ওয়েবডেস্ক : বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ যে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। রায় ঘোষণার পর থেকেই জাতিসংঘ (UN Human Rights Office), অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (HRW) মতো প্রভাবশালী সংস্থাগুলো বিবৃতি দিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। এই রায়টি যেমন একদল মানুষের কাছে 'গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত', তেমনি মানবাধিকারের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এটি উদ্বেগেরও জন্ম দিয়েছে।

এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রধান চিন্তা হলো, বিচারটা খুব তাড়াতাড়ি করা হয়েছে এবং শেখ হাসিনা আদালতে উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও রায় দেওয়া হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দুটো সংস্থাই বলছে, শেখ হাসিনা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দুজনেই আদালতে হাজির ছিলেন না। তাঁরা নিজেদের পছন্দমতো উকিল দিয়ে ভালোভাবে নিজেদের কথা বলার ঠিকমতো সুযোগ পাননি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একজন বড় কর্মকর্তা বলেছেন, "শেখ হাসিনার সরকারের ওপর মানুষের রাগ বা ক্ষোভ থাকতে পারে, কিন্তু তবুও যেকোনো অপরাধের বিচারে সারা দুনিয়ার সব নিয়ম ঠিকভাবে মানা দরকার।" এই সংস্থাগুলো বলছে, এত দ্রুত এবং আসামি ছাড়া বিচার করাটা একটা 'বড় চিন্তার বিষয়'।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত অফিস এই রায়কে একটু অন্যভাবে দেখেছে। তারা বলছে, গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে আন্দোলনের সময় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য এই রায়টা 'একটু স্বস্তির মুহূর্ত'। অর্থাৎ, তারা মনে করে যারা অন্যায় করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। তবে, একই সাথে জাতিসংঘ সারা পৃথিবী থেকে ফাঁসির সাজা পুরোপুরি তুলে দেওয়ার পক্ষে। তারা পরিষ্কার বলেছে, বড় অপরাধের বিচার অবশ্যই এমনভাবে হওয়া উচিত যাতে সব নিয়ম মানা হয় এবং কেউ যেন বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে না পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও বলছে, ফাঁসির সাজা হলো 'সবচেয়ে খারাপ এবং নিষ্ঠুর শাস্তি' এবং কোনো ভালো বিচার ব্যবস্থায় এর জায়গা নেই।

এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো একটা বিষয়ে একমত যে, গত বছরের আন্দোলনের সময় যারা মানুষ মারার বা অন্য খারাপ কাজ করেছে, তাদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। কিন্তু তারা বলছে, যদি বিচারটা পরিষ্কার না হয় এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে এই রায়টা আসলে জবাবদিহির পথে উল্টো বাধা দিতে পারে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, এই ট্রাইব্যুনাল বা বিচারালয় আগে থেকেই স্বাধীন নয় বলে তাদের বদনাম আছে। তাই এই সংস্থাগুলো জোর দিয়ে দাবি করেছে, যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের আসল বিচার দিতে হলে, এই মামলাটি যেন খুব স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে, সারা বিশ্বের সব নিয়ম মেনে, আবার ভালোভাবে দেখা হয়। তারা চাইছে, বাংলাদেশে যেন রাজনীতির প্রভাব ছাড়া সত্যি সত্যি এবং স্বচ্ছ বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad