রাতদিন ওয়েবডেস্ক - কলকাতা ও আশপাশে আজ আকাশ থাকবে মেঘলা। দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘুরবে। আর্দ্রতার কারণে ভ্যাপসা অনুভূতি থাকবে তীব্র। সন্ধ্যার পর বৃষ্টি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে পারে। রাত বাড়লে তাপমাত্রা ধীরে কমবে। শহরের ট্রাফিকে বৃষ্টির প্রভাব পড়তে পারে। সঙ্গে ছাতা, রেইনকোট, জলরোধী কভার রাখাই ভাল। আবহবিদদের মতে, শহরে আজ গরমের সঙ্গে লেগে থাকবে স্যাঁতসেঁতে ভাব। হালকা রোদের ফাঁকে ফাঁকে মেঘ ঘনীভূত হতে পারে। মধ্যাহ্নে শরীরের অনুভূত তাপমাত্রা অনেকটা বেশি লাগতে পারে। দুপুরের পর বজ্রগর্জন শোনা যেতে পারে। স্থানীয় মেঘের সিস্টেমে হঠাৎ শাওয়ার নামতে পারে। ফলে রাস্তা ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। দক্ষিণ, দক্ষিণ পশ্চিম দিকের হালকা দমকা হাওয়া বইতে পারে। বিক্ষিপ্ত বজ্রসহ বৃষ্টি এলাকা ভেদে ওঠানামা করবে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণবঙ্গে দিনভর আকাশ থাকবে মূলত মেঘলা। দুপুর পর্বে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। উপকূলঘেঁষা অংশে দমকা হাওয়ার দাপট থাকতে পারে। জলাবদ্ধতার আশঙ্কা যেখানে বেশি, সেখানেই বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। নোনা জলমিশ্রিত এলাকায় সড়কে পিচ্ছিল ভাব বাড়তে পারে। বেলা গড়ালে বজ্রসহ বৃষ্টির দফা দফা সম্ভাবনা। রাত্রিতে বিচ্ছিন্ন ঝোড়ো বৃষ্টি হতে পারে। অত্যাবশ্যক না হলে রাতের ভ্রমণ এড়ানো ভাল। মোটের উপর মেঘ, বৃষ্টি, দমকা হাওয়ার দিন। এবং উত্তরবঙ্গে দুপুর থেকে বিকেল, বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সাধারণত ৩১ থেকে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর্দ্রতায় অস্বস্তি বাড়তে পারে। শপার, বাজার, স্টেশন এলাকা ভিড়ের সময়ে যানচলাচল মন্থর হতে পারে। বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ে স্থানীয় বিপর্যয় দেখা যেতে পারে। আবহবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন, মোবাইল, ল্যাপটপ জলরোধী ব্যাগে রাখুন। বাইক আরোহীরা রেইন গিয়ার ব্যবহার করুন। গাছতলায় দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলা এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাতের সময় খোলা জায়গা এড়ান।
আজ রাজ্যজুড়ে বৃষ্টির ছোঁয়া নানা দফায় মিলতে পারে। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে অক্ষরেখা সক্রিয় থাকায় মেঘের সিস্টেম কাজ করছে। উপকূলের দিকে দমকা হাওয়া, ভেতরজেলার দিকে বজ্রঝড়ের চরিত্র প্রাধান্য পেতে পারে। দিনের দ্বিতীয়ার্ধে বৃষ্টি বাড়ার ইঙ্গিত আছে। কিছু জেলায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতির দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্য। আবহাওয়ার এই দোলাচলে তাপমাত্রা তুলনামূলক নিয়ন্ত্রিত, তবে আর্দ্রতার কারণে অস্বস্তি থাকবে। রাত বাড়ার সঙ্গে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরের ২৪ ঘণ্টাও মেঘ, ঝোড়ো বৃষ্টি, দমকা হাওয়ার রুটিন চলতে পারে। স্থানভেদে মাত্রা বদলাবে।
কলকাতায় ঘণ্টাভিত্তিক চিত্র বলছে, দুপুর থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। বিকেল নাগাদ বজ্রসহ শাওয়ার বেশি সম্ভাব্য। সন্ধ্যার পর বৃষ্টি ছড়িয়ে ছিটিয়ে, তবে বিরতি দিয়ে আসবে। বাতাস দক্ষিণ-পশ্চিমমুখী, আর্দ্রতা বেশি থাকায় গুমোট অবস্থা। রাস্তায় জল জমে থাকলে বিকল্প রুট ভাবুন। আবহবিদদের মতে, প্রকাশ্য স্থানে ভিজে তার, খোলা সিগন্যাল বক্সের কাছাকাছি না যাওয়াই নিরাপদ। বিলবোর্ড, পুরনো গাছের নিচে দাঁড়ানো এড়ান। ফ্ল্যাট, অফিসে জানালা খোলা রাখলে নেট, গার্ড বসান। নীচুতলায় বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে দূরে পানি সরান।
বৃষ্টির মধ্যেও শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করতে পারে। সর্বনিম্ন ২৬ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। শরীরের অনুভূত তাপমাত্রা আরও বেশি লাগতে পারে। আর্দ্রতার স্তর উচ্চ, তাই শরীরে ক্লান্তি জমতে পারে। হালকা, বায়ু চলাচলকারী পোশাক ভাল। পর্যাপ্ত জলপান জরুরি। দুপুরে ভারী খাবার এড়ালে লাভ। শিশু, বয়স্ক, অ্যাজমা রোগীরা বাড়তি সতর্কতা নিন। আবহবিদরা বলছেন, দরকারে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।
অফিস সময়ের প্রস্তুতিতে জোর দিন। ছাতা, রেইনকোট, জলরোধী জুতো রাখুন। ব্যাগে ডকুমেন্টের জন্য জিপ লক পাউচ রাখুন। ক্যাব বুকিং আগেভাগে করুন। লোকাল, মেট্রো বিকল্প ধরে সময় বাঁচান। রাস্তায় পিচ্ছিল মোড়ে গতি কমান। বাইকে ডাবল ব্রেক চেক করুন। চারচাকা গাড়িতে ওয়াইপার, ডিফগার চালু রাখুন।
রাজ্যস্তরে আবহাওয়া সংক্রান্ত সতর্কতায় জোর দেওয়া হয়েছে। রাজধানী কলকাতা থেকে উপকূল, জঙ্গলমহল, উত্তরবঙ্গ—বৃষ্টি ও বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা জারি। মধ্যাহ্ন থেকে মধ্যরাত, সময়ই আজ মূল ট্রিগার। কোথাও হালকা, কোথাও মাঝারি, কোথাও দমকা হাওয়ার সঙ্গে শাওয়ার। বৃষ্টির তীব্রতা উত্তর ও দক্ষিণে স্থানভেদে বদলাবে। আর্দ্র গরম কমবে না, তবে রাতের দিকে স্বস্তি বাড়তে পারে।
দৃশ্যত, শহরের ওপর ভারী স্যাঁতস্যাঁতে মেঘের স্তর ভেসে থাকবে। দুপুরের রোদ মেঘ ভেঙে এলেও স্থায়ী নয়। স্থানীয় কনভেকশনে মেঘ তৈরি হচ্ছে বারবার। তাপ আর আর্দ্রতা মিলিয়ে বজ্রগঠন অনুকূল। তাই বাজ পড়ার আশঙ্কা হালকা নয়। আবহবিদরা সতর্ক করছেন, নির্মাণসাইটে সেফটি গিয়ার মানুন। ওপেন টেরেসে ভেজা সার্কিট এড়ান। টিভি, রাউটার, ডেস্কটপে সার্জ প্রোটেক্টর ব্যবহার করুন। পোষ্য নিয়ে হাঁটাহাঁটি করলে বজ্রঝড়ে ঘরে ফিরুন।
যাতায়াতে বাস্তব পরিকল্পনা জরুরি। মেট্রো, লোকাল, বাসের সময়সূচি আগে দেখে নিন। রাইড শেয়ার নিলে পিকআপ স্পট শুকনো, আলোযুক্ত রাখুন। ইয়ারফোনে শব্দ কমিয়ে চারপাশের সিগন্যাল শুনুন। ফুটপাথের স্ল্যাব ঢিলে থাকলে এড়িয়ে চলুন। জলভরা গর্তে গাড়ির চাকা পড়লে থেমে দেখুন। রাস্তা পারাপারে জেব্রা, সিগন্যাল মেনে চলুন। বাইকে জলছিটে ব্রেক লাইন দুর্বল হতে পারে, টেস্ট ব্রেক নিন। গাড়িতে এয়ার কন্ডিশন চালালে ডিফগার দিয়ে কাঁচ পরিষ্কার রাখুন।
স্বাস্থ্যসুরক্ষায় ছোট ছোট অভ্যাস বড় কাজ দেবে। পথে পথে ওআরএস, জল, পরিচ্ছন্ন বোতল রাখুন। ভিজে কাপড় তাড়াতাড়ি বদলান। সর্দি কাশি হলে মাস্ক ব্যবহার করুন। জুতোর ভিতর স্যানিটারি প্যাড বা ন্যাপকিনে স্যাঁতসেঁতে রোধ কাজে লাগে। শিশুদের জন্য বাড়তি পোশাক, ন্যাকড়া, ছোট ছাতা রাখুন। প্রবীণদের জন্য স্লিপপ্রুফ স্যান্ডাল ভাল। অ্যাজমা, অ্যালার্জির ওষুধ সহজে পাওয়া যায় এমন পাউচে রাখুন। কাজ শেষে বাড়ি ফিরে কুসুমগরম জলে স্নান করুন।
শেষ কথা, বৃষ্টি আজ সারা দিন জুড়েই ছড়ানো থাকবে। দুপুর থেকে বিকেল, বজ্রসহ শাওয়ার বেশি সম্ভাব্য। রাত বাড়লে তীব্রতা কমবে, তবে শাওয়ার থেকে যাবে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত, কিন্তু আর্দ্রতার দাপট থেকে যাবে। যাত্রা, কাজ, পড়াশোনা, সব কিছুতেই একটু আগে ভাবুন। ছাতা, রেইনকোট, জলরোধী কভার আজ অত্যাবশ্যক। শহরে ভিজে রাস্তা, সিগন্যাল, উন্মুক্ত তার থেকে দূরে থাকুন।