রাতদিন ওয়েবডেস্ক - দক্ষিণ কলকাতার রাস্তায় পুজোর আগের পরিদর্শনে বেরিয়ে নাগরিকদের সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়লেন কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম, বেহালা থেকে গড়িয়া হয়ে ইএম বাইপাস পর্যন্ত টানা ঘুরে দেখার সময় এক মহিলা অভিযোগ করেন, গত বছর যেমন ছিল রাস্তার অবস্থা, এ বছরও তা-ই আছে, মেয়র জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে জল দাঁড়ালে রাস্তা ভাঙে, তাই যেখানে যেখানে জল জমে সেখানে পেভার ব্লক বসিয়ে দ্রুত মেরামতি চলছে, এ দিন সকালে জোকা বেহালা গড়িয়ার অংশে নর্দমা লাইন উন্নয়নের কাজও তিনি দেখেন বলে জানা গেছে।
একই পরিদর্শনের দ্বিতীয় দফায় মহানগরের ব্যস্ত সড়ক ধরে মেয়রের কনভয় মেট্রোপলিটন মোড় থেকে সিআইটি রোড সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ পার্ক স্ট্রিট গড়িয়াহাট গোলপার্ক হয়ে হাজরা পর্যন্ত যায়, সেখানে নাগরিকদের কাছ থেকে খোঁজ নেন কোথায় জল নামছে ধীরে আর কোথায় পটহোল আছে, এই অভিযোগ শুনে দফায় দফায় ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দেন তিনি, দ্রুত প্যাচিং আর কংক্রিট টপিংয়ের কথা বলেন, উৎসবের ভিড়ের আগে যাতায়াত স্বাভাবিক রাখতে ড্রেনেজ আপগ্রেডের উপর জোর দেন মেয়র।
তুলনা টানা হয় পুরুলিয়া ঝাড়গ্রামের রাস্তার সঙ্গে, প্রশ্ন ওঠে, যদি রাজ্য সরকার জেলা শহরে ভালো রাস্তা করতে পারে, কলকাতা পুরনিগম কেন বছরভর একই মান ধরে রাখতে পারে না, জবাবে মেয়র বলেন, বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি, জল জমলেই পিচঢালা স্তর দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাই জল নামার পথ খোলা রাখা আর নীচু অংশে ব্লক বসানোই এখন লক্ষ্য, তিনি আরও বলেন, পুজোর আগে শহরের একাধিক রুটে আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেন লাইন নির্মাণ ও সংস্কার হয়েছে, সেটিও টেকসই রাস্তার পূর্বশর্ত।
দিনভর ঘুরে দেখা জায়গার মধ্যে ছিল জেমস লং সরণি শখেরবাজার মতিলাল গুপ্ত রোড হরিদেবপুর মহাত্মা গান্ধী রোড, এ ছাড়া ইএম বাইপাসের বিল্ডিং মোড় থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত লম্বা স্ট্রেচ কভার করা হয়, নাগরিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে যে যে অংশে বড় গর্ত ছিল সেখানে তাৎক্ষণিক প্যাচওয়ার্কের নির্দেশ দেন মেয়র, পৌর কমিশনার ও প্রকৌশল শাখার আধিকারিকরাও সঙ্গে ছিলেন, নাগরিকদের অভিযোগ শুনে ফিল্ডে নির্দেশ দেওয়ার এই মডেলকে তিনি পুজোর আগের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং বলে ব্যাখ্যা করেন।এ দিনের মুখোমুখি হওয়া নাগরিকের অভিযোগের সুর ছিল সরাসরি, তিনি বলেন, গত বছর পুজোর সময় যেমন ছিল, এ বছরও গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার এলাকায় তেমনই, এক দুই মাসে মেরামতি হয়, তারপর ফের খারাপ হয়, মেয়র জানান, যেখানে জল দাঁড়ায় সেখানে বারবার ক্ষতি হয়, সেই জায়গায় পেভার ব্লক আর কংক্রিট ওভারলে দিচ্ছে পুরসভা, শহরের বহু রাস্তায় ড্রেনেজ আপগ্রেড চলার ফলে জল সরে যাওয়ার সময় কমবে, ফলে পিচস্তর টিকবে বেশি দিন।
বিতর্ককে ঘিরে বিরোধীরা কটাক্ষ করলেও প্রশাসনিক বার্তা পরিষ্কার, উৎসব মৌসুমে নির্বিঘ্ন চলাচলই অগ্রাধিকার, তাই জোনভিত্তিক রোডম্যাপ মেনে প্যাচিং মিলিং রিসারফেসিং এগোচ্ছে, রাতে কাজ বাড়ানো হয়েছে যাতে দিনের যান চলাচল না আটকে যায়, শহরের কেন্দ্রীয় ধমনী পথগুলিতে আলোকসজ্জার পাশাপাশি ডিম লিট স্ট্রেচে লাইটিং টিউন আপও হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর, পুজোর আগে রাস্তার অবস্থা দেখা পুরসভার রুটিন, এ বছরেও সেই ধারা বজায় থাকল।দিনশেষে বার্তা ছিল সমন্বয়ের, বৃষ্টি থামলেই পটহোল দেখা দেয়, তাই নাগরিকদের অভিযোগ আসামাত্র রেসপন্স টিম পাঠানো হচ্ছে, ইঞ্জিনিয়ারিং উইংকে পেভার ব্লকের জায়গায় কংক্রিট কভার কোথায় দরকার তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে, যে সব বরোতে অবৈধ সংযোগ বা ড্রেন দখল আছে সেখানে বিশেষ নজরদারি চলছে, মেয়র আগেও নির্দেশ দিয়েছিলেন, গাছ নালা খুঁটি সব পরিকাঠামো নিরাপত্তা অডিটের অধীনে আনতে, উৎসবের আগে সেই চেকলিস্টও আপডেট করা হচ্ছে।