Type Here to Get Search Results !

গর্ভপাত-সংকটে নথির চাপ, মানবিকতার অভাবে ক্ষোভ নেটিজেনদের

রাতদিন ওয়েবডেস্ক - কর্মক্ষেত্রে বিষাক্ত আচরণ নিয়ে নতুন বিতর্ক। রেডিটে এক মহিলার পোস্ট ঘিরে নেটপাড়া উত্তাল। অভিযোগ, গর্ভপাতের সময় হাসপাতালের কাগজপত্র দেখাতে চাপ দেওয়া হয়েছিল। ম্যানেজারের দাবিতে ছিল কড়া সুর, না হলে চাকরি যাবে। ওই সময় তিনি কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন, হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পাঁচ দিনের মধ্যে জ্বর, গর্ভপাতের যন্ত্রণা, কোভিডের জটিলতা—সব একসঙ্গে। অনলাইনে পোস্ট করার পর বহু মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

পোস্টে ওই মহিলা লেখেন, কয়েক বছর আগে তাঁর একবার গর্ভপাত হয়। ছয় থেকে সাত মাস পর আবার অন্তঃসত্ত্বা হন। আগের অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে ম্যানেজারকে জানাননি। কারণ হিসেবে জানান, ম্যানেজার নাকি বলেছিলেন, বাচ্চা নেয়ার চেষ্টা করো না, তুমি খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী। সহকর্মীদের আড়ালে তাঁকে নিয়ে এমন মন্তব্যও করেছেন, তিনি নাকি সন্তান নেয়ার জন্য পাগল। এই সময়েই অফিসে কোভিডের ঢেউ আসে। তিনি কোভিড পজিটিভ হন, বাড়িতে থাকেন। ঠিক তখনই ফের গর্ভপাত, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানান তিনি।অভিযোগ, সংকটের সময় কোনো সহানুভূতি দেখানো হয়নি। বরং বারবার হাসপাতালের ডিসচার্জ সামারি চাইতে থাকেন ম্যানেজার। বলেন, এইচআর-এর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব আছে, সব জানা যাবে। চাপ বাড়তে থাকে সপ্তাহভর। মহিলা জানান, তিনি সংস্থার এক মহিলা সিওওকে জানান। সেখান থেকেও সাহায্য মেলেনি। এই অভিজ্ঞতা তিনি প্রকাশ্যে আনেন। পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ার ঢল নামে।

নেটিজেনদের একাংশ মন্তব্য করেন, কর্মক্ষেত্রে এমন দাসমালিক সুলভ আচরণ চলতে পারে না। কেউ পরামর্শ দেন, শুনছে না কেউ, চুপচাপ চাকরি ছেড়ে দিন। জীবনের চেয়ে চাকরি বড় নয়, সন্তানের চেয়ে নয়। উত্তরে ওই মহিলা জানান, তিনি চাকরি ছেড়েছেন। এখন তাঁর ১৮ মাসের এক ফুটফুটে সন্তান আছে। তিনি ধন্যবাদ জানান সকলকে।আরেকজন লেখেন, অনেক ভারতীয় ম্যানেজারের সহানুভূতির অভাব আছে। কর্মীদের বিশ্বাস করেন না, কাজ এবং ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য রাখেন না। আরেক ব্যবহারকারী বলেন, আমরা ভাবি মহিলারা মহিলাদের পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু বাস্তবে টাকাপয়সা এবং ক্ষমতার খেলাই বড় হয়। সিনেমা আর নাটকে যা দেখি, বাস্তবে তা হয় না। এই মন্তব্যগুলোও চর্চায় আসে। বিতর্ক বাড়তে থাকে।

ঘটনাটি যে অনলাইন বর্ণনা, তা স্পষ্ট করে বলা জরুরি। রেডিট পোস্টের সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই কঠিন। সংস্থার নাম, ম্যানেজারের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তাই কোনো আইনি অভিযোগের স্তরও জানা যায়নি। তবু ঘটনাটি একটি বড় ছবির দিকে ইশারা করে। কর্মক্ষেত্রে গোপনীয়তা এবং সহানুভূতি ভঙ্গুর হলে ক্ষতি গভীর হয়। সেখানেই নেটিজেনদের ক্ষোভ জমে ওঠে।ভারতে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসা তথ্য সংবেদনশীল। অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত নথি চাইলে তা কর্মনীতির প্রশ্ন তোলে। এইচআর নীতিতে মেডিক্যাল প্রাইভেসি রক্ষার কথা থাকে। শোক বা গর্ভপাতের মতো সময়ে সহানুভূতি এবং নমনীয়তা প্রত্যাশিত। অনেকে বলেন, এমন সময়ে নথি চাওয়া উচিত প্রয়োজনমতো সীমিত ভাবে। কর্মীকে নিরাপদ মনে করানোই প্রথম কাজ। এই আলোচনাগুলোও সামনে এসেছে।

এই বিতর্ক সংস্থাগুলোর জন্য সতর্কবার্তা। ট্রেনিং দরকার ম্যানেজারদের, সংবেদনশীল পরিস্থিতি কীভাবে সামলাতে হয়। এইচআরকে সক্রিয়, নিরপেক্ষ এবং গোপনীয় রাখতে হবে। অভিযোগের জানালা খোলা থাকতে হবে। রিপোর্টিং চ্যানেল স্পষ্ট হওয়া দরকার। নীতিতে লিখিত নির্দেশনা থাকতে হবে। যাতে এমন অবস্থায় চাপ নয়, সহায়তাই প্রথম সাড়া হয়।মহিলার পোস্টে শেষ বার্তা ছিল সহজ। তিনি চান, সংস্থাগুলি আরও মানবিক এবং শ্রদ্ধাশীল হোক। তিনি চান, এমন ম্যানেজারদের জবাবদিহি হোক।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad