রাতদিন ওয়েবডেস্ক : রবিবার, ৭ ডিসেম্বর কলকাতা ময়দানে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের দিন দুই প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধরের ঘটনা ঘিরে রাজ্যজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। 'চিকেন প্যাটিস' বিক্রির 'অপরাধে' ওই দুই গরীব বিক্রেতাকে মারধর করা এবং তাঁদের বাক্স থেকে সব খাবার ফেলে নষ্ট করে দেওয়ার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বিজেপির বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে।
এবার সেই ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদে মুখ খুলতে দেখা গেল জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "ভদ্রলোক তো এমনিতে কোনো অন্যায় করেনি। হতে পারে সেই প্রেক্ষিতে ওটা ভুল বা ঠিক। এটা ওঁর রুজিরুটি। মারধর করাটা কখনো ঠিক নয়। এটা আমি সমর্থন করতে পারছি না।"পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় একজন সাধারণ বাঙালি হিসেবে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, "আমরা তো কলকাতার ময়দানে ননভেজ বা ভেজ প্যাটিস ভেবে খাই না। আমরা তো ননভেজ খাই। বাঙালিরা তো মাংশাসী জাত। আমরা তো প্রতিদিন আমিষ খাই।" তিনি মনে করেন, সেই মানুষটি হয়তো বুঝতে পারেননি এই অনুষ্ঠানে আমিষ বিক্রি করা উচিত নয়, কিন্তু তিনি তো কেবল তাঁর জীবিকা নির্ধারণ করছিলেন। অভিনেতার এই মন্তব্য ঘটনাটির মানবিক দিকটি তুলে ধরেছে। অন্যদিকে, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও এই ঘটনায় বিরোধী বিজেপি-র কঠোর সমালোচনায় মুখর হয়েছে। সমাজমাধ্যমেও এই নৃশংস আচরণের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে।এই মারধরের ঘটনায় অবশেষে মঙ্গলবার ময়দান থানায় জোড়া এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়েছে। নির্যাতিত দুই বিক্রেতাই এফআইআর করেছেন। নির্যাতিতদের মধ্যে হুগলির বাসিন্দা রিজায়ুল জানিয়েছেন যে, ৭ ডিসেম্বর দুপুর ১টার সময় ব্রিগেডে চিকেন প্যাটিস বিক্রি করার সময় কয়েক জন তাঁকে চড়-ঘুষি মারে। শুধু তাই নয়, তাঁর বাক্সে থাকা প্রায় ৩ হাজার টাকার খাবার নষ্ট করে দেওয়া হয়। ৬০ বছর বয়সী অপর যে বিক্রেতাকে হেনস্থা করা হয়, তিনি হলেন সালাউদ্দিন। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে, এবং রাজনৈতিক মহলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও অবিলম্বে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
