রাতদিন ওয়েবডেস্ক : সেদিন শিয়ালদহ স্টেশন সেজে উঠেছে নিজ সজ্জায়। স্টেশন জুড়ে টানটান উত্তেজনা। ফুলের মালা দিয়ে একটি ট্রেন সজ্জিত। যাত্রা শুরু করানো হলো সবুজ পতাকা নেড়ে। করতালিতে কান পাতা দায়।মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে গোটা স্টেশন সেটির দিকে।এ ট্রেন না ছাড়লো ধোয়ার কুণ্ডলী, আর না করল কু ঝিক ঝিক। বেশ চট জলদি স্পিড তুললো। ট্রেনের কেবল ওভারহেড বিদ্যুৎ সংযোগে ছুঁয়ে থাকলো। কল্যাণীতে গন্তব্যে রেখে শিয়ালদার প্রথম ইলেকট্রিক ট্রেন সেদিন রওনা দিলো। সেই গৌরবময় দিনের ৬০ বছর পূর্ণ হল। সেদিন প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রেনটি পাড়ি দিয়েছিল প্রায় ৫৬ কিলোমিটার রেলপথ। এরপর থেকেই ওই রেল গাড়ির চাকা পৌঁছে দিয়েছে কোটি কোটি মানুষকে তার গন্তব্যে।রেলের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় দশকে এই শাখার ১৭৫২ কিলোমিটার পথের বিদ্যুতিকরণ হয়েছে।
বর্তমানে প্রায় ১৪ লক্ষ মানুষ তার সাথী।পূর্ব ভারতের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম শিয়ালদহ স্টেশন দূরপাল্লা ও লোকাল ট্রেনের জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৬৯ সালে শিয়ালদহ স্টেশনের যাত্রা শুরু হয়। প্রথমে কয়লার ইঞ্জিন পরে ডিজেল। একশো বছর পর ১৯৬৩ সালে শিয়ালদহ শাখায় প্রথম ইলেকট্রিক ট্রেনটি চালু হয়। রেলের এক আধিকারিকের কথায়, "ইলেকট্রিক ট্রেনের প্রবর্তন ভারতীয় রেলের জন্য একটি টার্নিং পয়েন্ট। এই লোকোমোটিভ ইঞ্জিন বাষ্প-চালিত ইঞ্জিনের তুলনায় বেশি শক্তিশালী। ক্ষমতা বেশি হওয়ায় জন্য অতিরিক্ত কামরা জুড়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই ট্রেনের গতিও বেশি। ফলে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। বাষ্প ইঞ্জিনের তুলনায় ইলেকট্রিক ট্রেন চলাচলের খরচও কম। সর্বোপরি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা রাখে ইলেকট্রিক ট্রেন। বাষ্প ইঞ্জিনে শব্দ দূষণ হতো। অতিরিক্ত কম্পন ছিল। ইলেকট্রিকে সে সব নেই বলে যাতায়াত আরামদায়ক।"বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সাথী এই শিয়ালদা স্টেশন। যাদের হাত ধরে এই স্টেশনের ট্রেন পরিষেবার আধুনিকরন হয়েছিল তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান পূর্ব রেল। এখন শিয়ালদা ভারতের ব্যস্ততম স্টেশন গুলির মধ্যে একটি। সে ১৪ লক্ষ মানুষকে সঙ্গী করে অতিক্রম করেছে ১৭৫২ পথ।