পূর্ব রেল সূত্রের খবর শীত দরজায় কড়া নাড়তে না নাড়তেই কুয়াশায় যাত্রা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কায় উত্তর ও উত্তর-পূর্ব ভারতের একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বেশিরভাগ ট্রেনের ট্রিপ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে কলকাতা স্টেশন থেকে। এদিকে আসন্ন ছুটির মরশুমে হরিদ্দার দেরাদুন অমৃতসরে যাওয়ার পরিকল্পনা করে থাকা যাত্রীরা খুবই বিপাকে পড়েছেন। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে নিশ্চিত আসনসংরক্ষণের আশায় অনেকেই একাধিক সাপ্তাহিক বা দি সাপ্তাহিক ট্রেনের টিকিট কেটে রেখেছিলেন। যাত্রীরা এই সিদ্ধান্তে খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে গিয়েছেন এবং তাদের বক্তব্য রেল শুধু দুঃখ প্রকাশ করেই দায়ভার ঝেড়ে ফেলে। অবশ্য রেলের দাবি উত্তর ও উত্তর পূর্ব তীব্র কুয়াশার কারণে বহু ট্রেন মন্থর গতিতে চলে। তাই ট্রেন চালালে বহু ট্রেন দেরিতে চলবে। তাই ট্রেনের সংখ্যা কিছুটা কাটছাঁট করে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে ট্রেনগুলো যেগুলো না চালালেই নয়, তার জন্যই এই পদক্ষেপ।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, বাতিল হওয়া ট্রেনের মধ্যে রয়েছে কলকাতা-ঝাঁসি, কলকাতা-অমৃতসর, হাওড়া-দেহরাদূন, কাঠগোদাম-হাওড়া, কামাখ্যা-গয়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস-সহ মোট আটটি ট্রেন।আংশিক বাতিল করা হয়েছে কলকাতা-আগরা ক্যান্টনমেন্ট, হাওড়া-মথুরা এক্সপ্রেসের মতো ট্রেন। ট্রিপ কমানো হয়েছে শিয়ালদহ-অজমের এক্সপ্রেসের।
হাওড়া-মথুরা এক্সপ্রেস আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১৩টি ট্রিপে আগরা থেকে মথুরার মধ্যে চলবে না। একই ভাবে কলকাতা-আগরা ক্যান্টনমেন্ট এক্সপ্রেস ৭ ডিসেম্বর থেকে ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১২টি ট্রিপে মথুরা এবং আগরার মধ্যে চলবে না। আবার ২ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে সোম, বুধ, বৃহস্পতি, শনি এবং রবিবার বাতিল করা হয়েছে হাওড়া-দেহরাদূন কুম্ভ এক্সপ্রেস।
আগামী ১০ ই ডিসেম্বর দেরাদুন যাওয়ার জন্য কুম্ভ এক্সপ্রেসে টিকিট কেটেছিলেন শুভেন্দু ঘোষ ও সীমা ঘোষ। ট্রেন বাতিল হওয়ায় এই এসএমএস তাদের কাছে এসেছে। শুধু হোটেল বুক করাই নয় টিকিটও কনফার্ম ছিল এই যাত্রীর। কিন্তু হঠাৎ এ ট্রেন বাতিল হওয়ার খবর শুনে ই পুরো পরিকল্পনাই যেন তাদের মাঠে মারা যেতে বসেছে।শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রায় চার মাস আগে টিকিট কেটেছি। আচমকা ট্রেন বাতিলে যাত্রীদের কী হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে, তার খোঁজ কি আদৌ রাখেন রেলকর্তারা?’’
বিভিন্ন যাত্রীদের আরো প্রশ্ন, কুয়াশার সময় ট্রেন দুর্ঘটনা এড়িয়ে চালাতে গেলে তরফ থেকে যে এত নয়া প্রযুক্তি তাহলে সেগুলো কাজে আসে কই?প্রসঙ্গত, কুয়াশার সমস্যা এড়িয়ে নিরাপদে ট্রেন চালাতে বছর দুয়েক আগে ফগ সেফ যন্ত্রের ব্যবহার শুরু করেছে রেল। খুব বেশি কুয়াশার সময়ও যাতে চালক দূর থেকে সিগন্যালের রং দেখে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তার জন্যই এই যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে।
রেল সূত্রের দ্বারা জানা যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাড়তে পারে আরো বাতিল ট্রেনের সংখ্যা। ফলে এই সিদ্ধান্তে রেল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে দুঃখ প্রকাশ করলে দায়ভার সরালেও সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তির চরমসীমায় পৌঁছাবে।